Header Ads Widget

প্রতিশোধ হিসেবে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ইসরায়েল পাল্টা জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।

 

১ অক্টোবর ২০২৪ সালে ইসরায়েল জেরুজালেমের আকাশে ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট করছে।


মঙ্গলবার ইরান ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে প্রায় ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। এই হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও ইসরায়েল সরকার দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়, এবং দেশের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার সদস্যরা বাংকারে আশ্রয় নেন।

এই হামলা ইসরায়েলের লেবাননে চালানো সামরিক অভিযানের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ঘটে। গত সোমবার ইসরায়েল লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে স্থল অভিযান শুরু করে এবং ব্যাপক বিমান হামলা চালায়, যার ফলে একদিনেই ৯৫ জন নিহত হন।

এর আগে, শুক্রবার ইসরায়েলের হামলায় বৈরুতের উপকণ্ঠে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হন। গত বছরের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই হিজবুল্লাহ ইরানের সমর্থনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সীমিত আকারে হামলা চালিয়ে আসছিল, যার জবাবে ইসরায়েলও পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছিল। ইসরায়েল ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে হামলা আরও তীব্র করে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ১ অক্টোবর ২০২৪ সালে, ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবের নিকটবর্তী বেন গুরিওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং মোদিন শহরের মধ্যবর্তী স্থানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।


গত বছরের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। চলতি বছরের এপ্রিলের শুরুতে ইসরায়েল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে বোমা হামলা চালিয়ে ইরানের এলিট বাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) এক কমান্ডারকে হত্যা করে। এর প্রতিশোধ হিসেবে, এপ্রিলের মাঝামাঝি ইরান ইসরায়েলের ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যা ছিল ইরান থেকে সরাসরি ইসরায়েলের ওপর প্রথম হামলা। পরবর্তীতে, ৩১ জুলাই ইসরায়েল হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করে। সর্বশেষ, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যু ইরানের জন্য বড় আঘাত হিসেবে দেখা দেয়।

মঙ্গলবার রাতে তেল আবিবসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ, হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া ও আইআরজিসি কমান্ডার আব্বাস নিলফোরোশনকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে এই হামলা চালানো হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

ইসরায়েল বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করলেও মধ্য ও দক্ষিণ ইসরায়েলের কিছু অংশে ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানে। তেল আবিবে ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ পড়ে দুজন আহত হয়েছেন বলে ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা বিভাগ জানিয়েছে, এ ছাড়া আরও কয়েকজন সামান্য আহত হয়েছেন।

এরই মধ্যে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কিছুক্ষণ আগে তেল আবিবে পৃথক বন্দুকধারীর হামলায় আটজন নিহত হন। এ ঘটনায় দুই বন্দুকধারীও নিহত হন।

ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েল যদি এ হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করে, তবে ইরান 'ধ্বংসাত্মক হামলা' চালিয়ে তার জবাব দেবে।

সিএনএন জানায়, ইসরায়েলে হামলা শুরুর পরপরই দেশটির আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার সদস্যরা বাংকারে আশ্রয় নেন। পাশাপাশি, ইসরায়েল ও ইরানের মাঝামাঝি অবস্থিত ইরাক এবং জর্ডানও তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ