Header Ads Widget

আপনি কি সত্যিই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন?


 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন ভাষণে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কার কথা বলছেন। বাংলাদেশে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেজন্য এখন থেকে সবাইকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।


তবে শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের মহাসমাবেশে বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না। তার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

আরো পড়ুন,

প্রবাসী আয়ে বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত

প্রশ্ন হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নিজে কি দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন নাকি সত্যিই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে? জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলছে, ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট তীব্রতর হবে।

বলা হয়, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ- ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া এবং দক্ষিণ সুদানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে। শুধু এশিয়া, আফ্রিকা বা ল্যাটিন আমেরিকা নয়, ইউরোপেও সংকট বাড়ছে। WFP দুর্ভিক্ষ ঘটতে পারে এমন কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে।


এই কারণগুলির মধ্যে রয়েছে-


1. যুদ্ধ এবং সংঘাত খাদ্য ঘাটতির প্রধান কারণ বলা হয়।


2. দ্বিতীয় কারণ হল জলবায়ু। পৃথিবীর অনেক দেশই হয়তো বন্যার কবলে পড়েছে, বা খরার কবলে পড়েছে। ফলে খাদ্য উৎপাদন কমে গেছে।


3. বিশ্ব অর্থনীতিতে করোনা মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি।


4. সার ও ডিজেলের মতো কৃষি উপকরণের দাম বেড়েছে।


5. ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতিও খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি করে।


রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা চাপের মুখে রয়েছে। বিশ্বব্যাপী গম রপ্তানির ৩০ শতাংশ এই দুই দেশের। এবং সূর্যমুখী তেলের 80 শতাংশ ইউক্রেন এবং রাশিয়া সরবরাহ করে। যুদ্ধ খাদ্য বাণিজ্যে বড় বাধা সৃষ্টি করে। সরবরাহ সংকট রয়েছে। জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। সার ও কৃষিপণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে।

এফএও অনুযায়ী খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে থাকা ৪৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশসহ তিনটি দেশ দক্ষিণ এশিয়ায় রয়েছে ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ শ্রেণীবিভাগ অনুযায়ী, দেশের সাড়ে তিন কোটি মানুষ এখন মাঝারি ও গুরুতর মাত্রায় ভুগছে। খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, যা মোট জনসংখ্যার 21 শতাংশ।


খাদ্য ঘাটতি এড়াতে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষামূলক কৃষির কথা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বারবার উঠে এসেছে। তবে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বলছে, সেচ খরচ বেশি, সারের দাম বেশি এবং শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় এ বছর আমনের উৎপাদন খরচ ৩৯ শতাংশ বেড়েছে।


চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন গড়ে ৬২৩ ডলারে ইউরিয়া সার কেনা-বেচা হয়েছে। গত বছর এটি ছিল 435 ডলার। রাশিয়া বিশ্বের সার উৎপাদনের 25 শতাংশ সরবরাহ করে।


আরও সংকট রয়েছে। অনেক কৃষক কম পরিশ্রমে বেশি ফলন দেয় এমন ফসলের দিকে ঝুঁকছেন। ব্যক্তিগতভাবে সমৃদ্ধ হলেও সার্বিক খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে দেশে চাল উৎপাদন হয়েছিল ৩ কোটি ১৩ লাখ টন। ২০২১-২২ অর্থবছরে তা দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৪ লাখ টন। অর্থাৎ ১৩ বছরে প্রবৃদ্ধি ২৯ শতাংশ। এ সময়ে ভুট্টার প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৬৭১ শতাংশে।


এদিকে, অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ধান পাকতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু সংকটের কারণে অসময়ে বন্যা ও খরা দেশের খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হলে বাংলাদেশ বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।

আরো পড়ুন

কপোতাক্ষ নদী খনির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি

এফএওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন ২ দশমিক ১ শতাংশ কমে যাবে। সেখানে বাংলাদেশের ধান, গম ও অন্যান্য শস্যের উৎপাদন শূন্য থেকে তিন শতাংশ কমতে পারে। ধানের উৎপাদন কমবে সবচেয়ে বেশি-৪০০,০০০ টন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ